ফেসবুকে মোটরসাইকেল বিক্রির নামে প্রতারণা, নোয়াখালীতে গ্রেপ্তার ৬

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অনলাইনে মোটরসাইকেল বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তিনটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ মার্চ) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান। এর আগে, মঙ্গলবার ও বুধবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের মো. আব্দুল করিমের ছেলে মো. জাকির হোসেন ওরফে রাকিব (২৪), একই এলাকার দ্বীন ইসলামের ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম ফারহান (১৯), একলামপুরের কাশেম কন্ট্রাক্টর বাড়ির আবুল কাশেমের ছেলে কামরুল হাসান ওরফে রাহাদ (২২), সদর উপজেলার ভুলুয়া কলোনির মো. লিটনের ছেলে মো. রিপন (২২), সোনাইমুড়ীর নাটেশ্বর গ্রামের সাহেব উল্যার ছেলে শামীমুর রহমান ওরফে শামীম (২২) এবং আলীপুর এলাকার সুলতান আহমদের ছেলে মো. ফয়সাল ওরফে বুলেট বাবু (২৩)।

পুলিশ জানায়, নোয়াখালী বাইক হাট নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে ৭০ হাজার টাকায় মোটরসাইকেল বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন আসামি মো. জাকির হোসেন ওরফে রাকিব। ওই বিজ্ঞাপন দেখে ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর গ্রামের শফিক রহমান (২০) যোগাযোগ করেন। এরপর তাদের মধ্যে মেসেঞ্জারে ও মোবাইলে কথোপকথন হয়।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শফিক রহমান তার এলাকার আজিজুর রহমান মিলনকে (২০) সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলটি কিনতে চৌমুহনী পৌরসভার গ্লোব ফ্যাক্টরি এলাকার একটি নির্দিষ্ট স্থানে আসেন। সেখানে রাকিব মোটরসাইকেলটি দেখান এবং দর-কষাকষি করেন।

এ সময় রাকিবের সঙ্গে থাকা অন্যরা— জাহিদুল ইসলাম ফারহান, মো. রিপন, কামরুল হাসান ওরফে রাহাদ, শামীমুর রহমান ওরফে শামীম ও মো. ফয়সাল ওরফে বুলেট বাবু— হঠাৎ পিছন থেকে এসে শফিক ও মিলনকে আটক করে ফেলে।

পুলিশ আরও জানায়, প্রতারকরা ভুক্তভোগীদের চড়-থাপ্পড় মেরে তাদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এরপর আরও টাকা রয়েছে কি না জানতে চাইলে ভুক্তভোগীরা টাকা আনেননি বলে জানায়। এতে প্রতারকচক্র ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের পার্শ্ববর্তী একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে মারধর করে।

পরে আশপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে এবং আসামি জাকির হোসেনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

পুলিশ জানায়, আটক জাকিরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যান্য আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর গাবুয়া বাজারের একটি মোটরসাইকেল সার্ভিসিং সেন্টার ও কয়েকজন আসামির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তিনটি মোটরসাইকেল— সুজুকি জিক্সার, পালসার ও অ্যাপাচি— জব্দ করা হয়।

বেগমগঞ্জ থানার ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শফিক রহমান বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের সদস্য। তারা ফেসবুকে কম দামে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা করত। এছাড়া চোরাই মোটরসাইকেল ও অন্যান্য মালামাল বিক্রির সঙ্গেও তারা জড়িত ছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, চক্রটির সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।