বেরোবিতে বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতার শাস্তি মওকুফ, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা রিফাত হোসেন রাফির শাস্তি মওকুফ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের প্রথম বর্ষের প্রথম সেমিস্টার ফাইনাল (মানোন্নয়ন) পরীক্ষায় ইঞ্জিনিয়ারিং ফিজিক্স (PHY 1101) পরীক্ষার সময় রিফাত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে নকল করতে গিয়ে কক্ষ পরিদর্শকের কাছে ধরা পড়েন। এ কারণে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় এবং বহিষ্কার করে।
কিন্তু সম্প্রতি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ বিবেচনায় তার শাস্তি মওকুফ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. তানজিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র একবারের জন্য রিফাতের শাস্তি মওকুফ করা হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন বলেন, "এক বছর আগে পরীক্ষায় মোবাইল নিয়ে নকল করার দায়ে বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীকে রাজনৈতিক বিবেচনায় শাস্তি মওকুফ করা হয়েছে, যা প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণের পরিচায়ক। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান জানান, "শৃঙ্খলা বোর্ড শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্ত নিলেও এটি এখনো চূড়ান্ত নয়। একাডেমিক কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেট অনুমোদন দিলে সে পুনরায় পরীক্ষায় বসতে পারবে।"
এদিকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. তানজিউল ইসলাম বলেছেন, "বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি এবং বিজ্ঞপ্তিতে কিছু ভাষাগত ভুল থাকায় সেটি রোববার সংশোধন করা হবে।"
এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছেন। তবে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদন ছাড়া রিফাত পরীক্ষায় বসতে পারবেন না বলে নিশ্চিত করেছে প্রশাসন।
What's Your Reaction?