বোয়ালমারীতে ১১ বছরের শিশুকন্যাকে হত্যার দায়ে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি:
Jun 4, 2024 - 17:49
 0  7
বোয়ালমারীতে ১১ বছরের শিশুকন্যাকে হত্যার দায়ে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড

১১ বছরের শিশুকন্যাকে হত্যার দায়ে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার বেলা ২ টায় ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ফারিহা খানম (১১) নামে এক শিশুকে হত্যা দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে রাসেল শিকদার (২৩) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ফরিদপুরের জেলা ও দায়রা জজ নারী ও শিশু নিযাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাসেল সিকদার বোয়ালমারী উপজেলার ইছাডাঙ্গা গ্রামের মনোয়ার শিকদারের পুত্র। 

মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট আনুমানিক বিকেল চারটায় একই এলাকার রাসেল শিকদার, ফারিয়ার বাবা মোক্তার হোসেনের মুদি দোকান থেকে ১৫০ টাকার পণ্য সামগ্রী বাকিতে কেনেন। সন্ধ্যায় রাসেল বাড়ি গিয়ে ফারিহাকে ডেকে ওই বাকি টাকা নিয়ে যেতে বলেন। রাত আনুমানিক সাড়ে ৭ টার দিকে ফারিহা টাকা আনতে গিয়ে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাত ৯ টার দিকে ফারিয়ার পরিবারের সদস্যরা রাসেলের বাড়ির বাথরুম থেকে হাত পা বাধা মুমুর্ষু অবস্থায় ফারিহা কে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে এই ঘটনায় ১৫ ই আগস্ট ২০২২ সালে ফারিয়ার বাবা মোক্তার হোসেন শিকদার বাদী হয়ে রাসেল শিকদারকে  আসামি করে নারী ও শিশু নির্যানত দমন আইনে হত্যার অভিযোগে বোয়ালমারী থানায় মামলা করেন।
এ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আজাদ হোসেন ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল এ হত্যা ও ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় রাসেল শিকদারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
২০২২ সালের ১৪ আগস্ট রাতে এ হত্যার ঘটনা ঘটে বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের ইছাডাঙ্গা গ্রামে । 
ফারিহা খানম ফরিদপুরের বোয়ালমারীর ইছাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মুদী ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেনের মেয়ে। পাঁচ বোনের মধ্যে সে চতুর্থ। ফারিহা পাশের গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার নড়াইল এম এ মান্নান উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওই আদালতের পিপি স্বপন পাল বলেন, আদালত হত্যা দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ৩০২ ধারায় রাসেল সিকদারকে মৃত্যুদন্ড দেন। একই সাথে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নিযাতন দমন আইনের ৯(৪)(খ) ধারায় দোষী সাবস্থ্য করে ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত।
 রায় ঘোষণার সময় এ হত্যা মামলার আসামি রাসেল শিকদার আদালতে হাজির ছিলেন। পরবর্তীতে উক্ত আসামিকে জেলা পুলিশের প্রিজন ভ্যানসহ স্কটের মাধ্যমে  ফরিদপুর জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এরায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে হত্যার শিকার ফারিয়ার মা জলি বেগম বলেন, দ্রুত এ রায় কার্যকর সহ পাশাপাশি তিনি তার পরিবারের নিরাপত্তার দাবি জানান।
এছাড়া এ রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এর ফলে দেশে শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা কমে আসবে বলে সর্বস্তরের জনগণ ‌ মনে করে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow