বোয়ালমারীতে মাতুব্বরের পরকীয়ায় ঘর ভাঙলো প্রবাসীর
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কুন্ডুরামদিয়া গ্রামে একটি পরকীয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে গোটা এলাকা জুড়ে। গ্রাম্য এক মাতুব্বরের পরকীয়ার জেরে এক প্রবাসীর সংসার ভেঙে যাওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে সচেতন এলাকাবাসীদের মধ্যে। অসাধু মাতুব্বর কামরুল শেখের বিচার দাবী করেছেন তারা।
এলাকাবাসী সূত্রে ও ভুক্তভোগী প্রবাসীর অভিযোগ থেকে জানাযায়,স্ত্রী-সন্তানদের সুখের আশায় বছর তিনেক আগে সৌদি আরবে পারি জমান কুন্ডুরামদিয়া গ্রামের মোঃ আলমগীর হোসেন। বাড়িতে রেখে যান স্ত্রী কাকলী বেগম,দুই মেয়ে আফরিন,সুরভি ও ছেলে আলিফকে। আলমগীর বিদেশ যাওয়ার কিছু দিন পর থেকেই তার সুন্দরী স্ত্রী কাকলী বেগমের পিছু নেয় গ্রামের কামরুল মাতুব্বর। দিনে কিংবা রাতে সুযোগ পেলেই নানান ছল-ছুতোয় সে কাকলীর বাড়িতে ডু মারতে আরম্ভ করে। এক পর্যায়ে কাকলীর সঙ্গে গভীর পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয় কামরুল। এরপর থেকেই দু'জনে মিলে ইচ্ছে মত বাইরে ঘোরা-ফেরা,একত্রে রাত্রি যাপন সহ নানা অনৈতিক তৎপরতায় লিপ্ত হয় তারা। বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে শুরু হয় ব্যাপক কানা-ঘুসা,জল্পনা-কল্পনা। তবে কামরুল শেখ প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়না। অবশ্য এক পর্যায়ে মায়ের এমন বিপথগামীতায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় বিবাহযোগ্য দুই মেয়ে আফরিন ও সুরভী। তারা সু-পথে ফেরাতে মাকে চাপ প্রয়োগের পাশাপাশি বিষয়টি বাবাকেও অবহিত করেন। ফলে এ নিয়ে মেয়েদের সঙ্গে মায়ের একেবারেই বনিবনা হচ্ছিল না। এ কারণেই ক্ষোভ-দূঃখ,লজ্জায় ৬/৭ মাস আগে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছোট মেয়ে সুরভী বিষ পানে আত্মহত্যা করে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এর আগে পরকীয়া প্রেমিক কামরুলের সহযোগীতায় বড় মেয়ে আফরিনকে পূর্ণাঙ্গ বয়স হবার আগেই বিবাহ দিয়ে দেন মা কাকলী বেগম। বড় মেয়ের বিয়ে, ছোট মেয়ের মৃত্যুর পর শিশু পুত্র কে নিয়ে মুক্ত জীবন যাপনের সুযোগে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে কাকলী বেগম। নানান খারাপ সংবাদ শুনতে-শুনতে ত্যাক্ত-বিরক্ত,হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন প্রবাসী স্বামী আলমগীর হোসেন। এক পর্যায়ে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন। অপর দিকে স্ত্রী কাকলীও স্বামী আলমগীরের সংসার না করার স্বীদ্ধান্ত নেয়। সম্প্রতি সে স্বামীর ঘরে থাকা নিজের ব্যাক্তিগত সমস্ত মালামাল নিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পিত্রালয়ে উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে,বাবার বাড়িতে অবস্থান নিয়ে কামরুলের সঙ্গে নির্বিঘ্নে পরকীয়া কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন কাকলী বেগম। নাম গোপন রাখার শর্তে ক্ষোভের সঙ্গে কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন,কামরুলের সঙ্গে সমঝোতা করেই স্বামীর ঘর ছেড়েছে কাকলী। সম্ভবত বিয়ের পিঁড়িতে বসার পরিকল্পনা থাকতে পারে তাদের। ঐ সূত্রগুলো আরো বলেন, একটি সোনার সংসার ধ্বংস করে দিয়েছে কামরুল মাতুব্বর। এরজন্য নারী-পুরুষ উভয়ের শক্ত বিচার দাবী করেন তারা। মুঠোফোনে এ বিষয়ে আলাপ কালে প্রবাসী আলমগীর হোসেন দূঃখ ভারাক্রান্ত কন্ঠে বলেন,যাদের সুখের আশায় প্রবাসে আসলাম তারাই আমাকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেছে। আমার স্ত্রীর কারণেই ছোট মেয়েটা আত্মহত্যা করেছে। আমার সমস্ত আয়-রোজগার কাকলী তুলে দিয়েছে তার পরকীয়া প্রেমিকের হাতে। দায়েক-দেনা পরিশোধের জন্য ১১ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছি। কিন্তু কোন দেনা পরিশোধ না করে সব টাকা কামরুলের হাতে তুলে দিয়ে ভোগ-বিলাসে জাীবন কাটিয়েছে কাকলী বেগম । শুধু তাই নয়,বিভিন্ন এনজিও থেকেও ঋন করে টাকা তুলে কামরুলকে দিয়েছে সে। অবশেষে,পরকীয়াকে স্থায়ী রুপ দিতে আমার ঘর ছেড়ে অন্যত্র ঠাই নিয়েছে দ্বিচারিণী কাকলী বেগম। এই জঘন্য অন্যায়ের বিচার চান প্রবাসী আলমগীর হোসেন। জানতে চাইলে অভিযুক্ত কামরুল মাতুব্বর বলেন,আলমগীর বিদেশ যাওয়ার পর তার পরিবারটিকে আগলে রেখেছি আমি। আপদ-বিপদে ছুটে গেছি সব সময়। কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করে উল্টো আমার বদনাম রটিয়েছে। এলাকার দুষ্ট লোকদের কথায় আলমগীর নিজের স্ত্রীকে ভুল বুঝেছে। পরিবারটির সঙ্গে আমার আন্তরিক সম্পর্ক থাকলেও কোন খারাপ সম্পর্ক নেই।
What's Your Reaction?