ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধ ড্রেজার ব্যবসার দৌরাত্ম্যে তিন ফসলি জমি হুমকির মুখে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ীরা বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলন করায় আশপাশের উর্বর কৃষিজমি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, এসব অবৈধ ড্রেজার ব্যবসার ফলে জমির মাটি সরে গিয়ে গভীর গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে, যার ফলে তিন ফসলি জমি ভেঙে পড়ছে। ভুক্তভোগীরা ভয়ভীতির কারণে মুখ খুলতে পারছেন না, কারণ এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের বরিশল গ্রামে দুলাল ভূঁইয়ার ছেলে শিহাবের নেতৃত্বে চলছে এই অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা। স্থানীয়রা জানান, শিহাব ও তার অনুসারীরা এতটাই প্রভাবশালী যে, কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পান না। সম্প্রতি, সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে শিহাবের লোকজন তাদের বাধা দেয় এবং হেনস্তা করার চেষ্টা করে।
এক পর্যায়ে শিহাবের অনুসারীরা বলেন, "দেশে কি সরকার আছে নাকি? আমরাই সব কিছু করবো। আপনারা আমার ছবি নিউজে দিয়ে দেন, দেখি আপনারা কি করতে পারেন!"
শুধু শিহাবই নয়, বরিশল গ্রামের নিজাম, ওসমান, পাপন, কানা মনির, তুহিন, মুরছালিনসহ আরও অনেকে এই অবৈধ ব্যবসায় জড়িত।
অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে ঘাটিয়ারা ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা জাবেদুল হক জানান, "এসিল্যান্ড ম্যাডামকে নিয়ে আমরা কয়েকটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি ও জরিমানা করেছি। বরিশলে লোক পাঠিয়েছি, বিষয়টি দেখবো।"
তবে স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, প্রশাসনের এই পদক্ষেপ শুধুই লোক দেখানো। তারা বলেন, "প্রশাসনিক উচ্চপর্যায়ে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই এসব ব্যবসা চলছে। না হলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পরও কেন অবৈধ ড্রেজার চলবে?"
এ বিষয়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুক্তা গোস্বামী বলেন, "আমরা লোক পাঠিয়েছিলাম, আপাতত কাজ বন্ধ আছে।" তবে বাস্তবে দেখা যায়, ড্রেজার ব্যবসায়ীরা ঠিকই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
বালু উত্তোলনের ফলে এলাকার তিন ফসলি জমি ধ্বংসের মুখে পড়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, "আমাদের জমিগুলো একসময় বড় পুকুরে পরিণত হবে। আমরা ফসল চাষ করতে পারব না। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এসব অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করা।"
ভুক্তভোগীরা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
What's Your Reaction?






