ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবী সমিতি ও নাগরিক কমিটির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতার উপর হামলার ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। মঙ্গলবার দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সকালে জেলা আইনজীবী সমিতি সংবাদ সম্মেলন করার পর দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। এ সময় আদালত এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়।
এর আগে গত রোববার আইনজীবী ও তাদের সহযোগিদের পরিকল্পিত হামলার শিকার হন বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোঃ আতাউল্লাহ। আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, সালিশ সভায় বাদী-বিবাদী পক্ষের মধ্যে হওয়া মারামারির সময় জাতীয় কমিটির এক নেতা আহত হন।
আইনজীবী সমিতি ভবনে হওয়া সংবাদ সম্মেলনে সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ ইউনুছ সরকার জানান, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোঃ আতাউল্লাহ ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য বিএম ফরহাদ হোসেনের ঘনিষ্ঠজন আসাদুজ্জামান খোকনকে সোমবার জামিন করান। চট্টগ্রাম আদালতে দায়ের হওয়া মামলার উপনথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া এনে বিচারককে চাপ প্রয়োগ করে জামিন করিয়েছেন, যা নজিরবিহীন ঘটনা।
এরপর কসবার একটি পারিবারিক সালিশ করার জন্য বাদী পক্ষের হয়ে আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুলের কক্ষে যান। সেখানে সালিশ হওয়া না হওয়া নিয়ে বাদী ও বিবাদী পক্ষের মধ্যে হওয়া মারামারিতে টেবিলের গ্লাস লেগে পড়ে গিয়ে একজন আহত হন। বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে ফেসবুকে লাইভ করে অপপ্রচার চালানো শুরু হয়। পরে তাদের পক্ষ নিয়ে কয়েকজন এসে মফিজুর রহমান বাবুলের কক্ষে ভাংচুর চালায়। তবে মফিজুর রহমান বাবুল কোনো পক্ষেরই আইনজীবী নন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে শহরের কাউতলীর সড়ক ভবনের সামনে থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটির একটি বিক্ষোভ মিছিল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শেষ হয়। সেখানে তারা মফিজুর রহমান বাবুলকে জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক উল্লেখ করে তাকে গ্রেপ্তার করার জন্য শ্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ তাদেরকে সেখানে আটকে দেয়। এক পর্যায়ে মিছিল নিয়ে ফেরার পথে সার্কিট হাউজের ভেতরের রাস্তা দিয়ে তারা আবার আদালত প্রাঙ্গনে প্রবেশের চেষ্টা করে। এখানেও পুলিশের বাঁধার মুখে পড়ে তারা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে। মফিজুর রহমান বাবুলকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে ঘোষণা দেয়া হয়।
এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় প্রেসক্লাবে করা সংবাদ সম্মেলন করে মোঃ আতাউল্লাহ এ বিষয়ে দেয়া পুলিশ সুপারের বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানান। তিনি দাবি করেন, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার যে কথা বলছেন সেটা মিথ্যা। কোনো আত্মীয়ের কাজে আদালতে তিনি আসেননি।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন জানান, আদালত এলাকায় এমনিতেই পুলিশ থাকে। এখানে বিক্ষোভ কিংবা অন্য কিছু করার সুযোগ নেই। বিক্ষোভ কারিদেরকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সার্বিক পরিস্থিতিতে পুলিশ সতর্ক আছে। মারামারির ঘটনায় অভিযোগ দিলে সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
What's Your Reaction?