ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঈদের আনন্দ পরিণত হলো বিষাদে
নরসিংদীর মাধবদীতে কাভার্ড ভ্যান ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ নিহত ছয়জনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলছে শোকের মাতম। তারা সবাই ঈদের ছুটিতে মাইক্রোবাসে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ফিরছিলেন।
নিহত ছয়জনের মধ্যে একই বাড়ির চারজন ও প্রতিবেশী দুইজন রয়েছে।
নিহতরা হলেন, বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের আব্দুল মমিনের ছেলে মজিবুর রহমান (২৭), তার ভাগনী মীম আক্তার (২০) ভাগিনা আবু হুরায়রা (৯) তার চাচা জসিম (৩০) ও প্রতিবেশী গ্রাম জালালপুরের হেলাল ও বাবুল।
এ ঘটনার পর পুরো গ্রাম জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাদের ঈদের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়েছে। নিহতদের মরদেহ একনজরে দেখার জন্য বাড়িতে আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশীসহ সকলেই ভিড় করছে। তাদের এই অকাল মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।
নিহতের চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। সেখানে লেপ তোষকের ব্যবসা করতেন। ঈদের ছুটিতে পরিবারের সাথে আসার পথে দুর্ঘটনায় সে সহ তার পরিবারের আরো তিনজন মারা যায়। মৃত্যুর খবর পেয়ে আমাদের ঈদ আনন্দ বেদনায় পরিণত হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
নিহতের বোন সাথি আক্তার বলেন, আমার ভাই আসার আগে মুঠোফোনে বলেছিল, ঈদের দিন এসে আমি তোমাদের নিয়ে যাব আমাদের বাড়িতে। এরপর থেকে ফোন আসে মৃত্যুর খবর।
প্রতিবেশীরা জানান, এমন একটি আনন্দের দিনে মৃত্যুর মিছিলের যন্ত্রনা কোনভাবেই সহ্য করার নয়। সড়কে এমন দুর্ঘটনা আমরা আর দেখতে চাই না। সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে সরকার যেন কঠোর পদেক্ষেপ নেয় সেই দাবি জানাচ্ছি।
নিহতদের স্বজনরা জানান, ঢাকা থেকে একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসে চেপে নারী ও শিশুসহ মোট ১৩ জন যাত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে আসছিলেন। যাত্রাপথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি কাবার্ডভেনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই এক শিশুর মৃত্যু হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় ১৩ জনকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে একজন নারীসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়। পরে ঢাকা মেডিক্যালে আরো দুইজন মারা যায়।
এদিকে দুপুর তিনটায় নিহত মুজিবুর, তার ভাগ্নে আবু হুরায়রা ও ভাগ্নে মিম আক্তারের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
What's Your Reaction?