ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগের সাথে সমঝোতা করে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই কর্মসূচী শেষ করে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা প্রতিনিধি
Jul 17, 2024 - 18:11
Jul 17, 2024 - 18:12
 0  6
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগের সাথে সমঝোতা করে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই কর্মসূচী শেষ করে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগের বাঁধায় কোটার যুক্তিক সংস্কার দাবির কর্মসূচি পুরোপুরি পালন করতে পারেনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। পরে ছাত্রলীগের সাথে সমঝোতা করে কয়েক মিনিটের মধ্যেই সংক্ষিপ্তভাবে তাদেরকে কর্মসূচী শেষ করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।

 মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে উভয়পক্ষ অবস্থান নেন।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দুপুর তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন। কোটার যৌক্তিক সংস্কার দাবির কর্মসূচি হিসেবে  প্রেসক্লাবের সামনে তাদের অবস্থান কর্মসূচী, প্রচারপত্র বিতরণ ও আলোচনা সভার করার কথা ছিল। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের পাশাপাশি জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ও সেখানে জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন শোভন, সদস্য আজিজুল ইসলামসহ ছাত্রলীগের নেতার্মীদের জটলা বাড়তে থাকে।
প্রেসক্লাবের সামনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের সাথে জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট আলোচনা হয়। কোটার যৌক্তিক সংস্কার দাবির কর্মসূচী পালনকে কেন্দ্র করে কোনো অঘটনা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে এর দায় ভার কে নিবে বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের জানানো হয়।
ছাত্রলীগের এই তৎপরতা ও বাঁধার মুখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা কর্মসূচী থেকে পিছু হটেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদর উপস্থিতিতেই “মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই” সহ কয়েকটি শ্লোগান দেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সদস্যরা।
সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী সানিউর রহমান। তিনি বলেন, সরকারের যে কোটা আছে আমরা সেটির যৌক্তিক সংস্কার চাই। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে চাইছে। কিন্তু সারা বাংলাদেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে অন্যায়ভাবে অত্যাচার ও নিপীড়ন করা হচ্ছে। আমরা এই অত্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা চাই উচ্চ আদালতের আপীল বিভাগের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হোক। আমরা থাকবো পড়ার টেবিলে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু আমাদের থাকতে হচ্ছে রাজপথে। সরকারের কাছে দাবি চলমান সমস্যার সমাধান হোক এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর যেন কোনো হামলা না হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো প্রত্যাহারসহ হামলার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান তারা। 
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন শোভন বলেন, আমরাও চাই কোটার যৌক্তিক সংস্কার হোক। কিন্তু চলমান আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। জামায়াতসহ বিএনপির লোকজন কোটার আন্দোলনকে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করেছে। তারা বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে যারা কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করতে এসেছেন তাদের সাথে আমরা কথা বলেছি। সুন্দরভাবে কর্মসূচী পালন করতে পারলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই বলে তাদের জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের কাছে তথ্য আছে যে জেলা ছাত্রদল, জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা তাদের কর্মসূচীর সাথে সহমত পোষণ করেছে এবং একটি নির্দিষ্টস্থানে জড়ো হয়ে বিশঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করবে।


 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow