ভাঙ্গায় টিকটকার তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণঃ ইউপি সদস্যের পুত্রসহ আটক- ৬

ভাঙ্গা(ফরিদপুর) প্রতিনিধি
Jan 4, 2025 - 20:32
 0  11
ভাঙ্গায় টিকটকার তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণঃ ইউপি সদস্যের পুত্রসহ আটক- ৬

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় টিকটক করার কথা বলে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের পর জোরপূর্বক নগ্ন ভিডিও ধারণের অভিযোগে এক ইউপি সদস্যের  ছেলেসহ ৬ যুবককে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নের বাবলাতলা গ্রাম থেকে ধর্ষণ চক্রের সদস্যদের আটক করা হয়। এ সময় ওই  ইউপি সদস্যের ছেলের মোবাইলে ধারণকৃত নগ্ন ভিডিওর ফুটেজ জব্দ করা হয়। অভিযুক্তদের আটকের পাশাপাশি ভুক্তভোগী তরুণীও বর্তমানে থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। 

শনিবার বিকেলে ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোকসেদুর রহমান সাংবাদিকদের  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণী অভিযোগ দেওয়ার পর  জড়িত ৬ যুবককে অভিযান চালিয়ে ইতমধ্যে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণ সহ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা।

 এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আটক যুবকদের পরিচয় যাচাই-বাছাই চলছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তিনি। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জান গেছে, গত ৩১ ডিসেম্বর২০২৪ ইং তারিখে  বাবলাতলা গ্রামের স্থানীয় আকরাম খাঁন নামের এক টিকটকার ও ভিডিও ক্রিয়েটর ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে (২০) একটি নতুন টিকটক ভিডিও তৈরির জন্য বোয়ালমারী উপজেলা থেকে ভাঙ্গায় আসতে বলে। এতে আকরামের সহযোগী  মধুখালী উপজেলার জুয়েল মোল্লাসহ ও অজ্ঞাত আরও এক যুবক এ কাজে সম্পৃক্ত হন। এরপর ওই দিনই ঘারুয়া গ্রামে জনৈক এক বাড়ির মালিকের বসতঘরে আটকে রেখে ওই তরুণীকে ভয়ভীতি ও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রথম দফায় ধর্ষণ করে আকরাম হোসেন। এরপর সেখান থেকে ওই তরুণীকে আকরাম ও তার সহযোগী দুই যুবক ৩ জানুয়ারি উপজেলার বাবলাতলা বাজার সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়।  সেই বাড়ির মালিককে আকরাম ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে স্ত্রী পরিচয় দেয়। বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহ হলে চুমুরদী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. আনারুদ্দিন,  ছাইদুল মোল্লাসহ ৫-৭ জন মিলে আকরাম ও ওই তরুণীকে বসতঘরে আটকে রাখে।

ভুক্তভোগী ওই তরুণীর জবানবন্দি অনুসারে  পুলিশ আরও জানায়, রাত সাড়ে ১২টার পর থেকে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী ইউপি সদস্যের ছেলে ছাইদুলসহ তার সহযোগী ৫-৬ জন যুবক ওই তরুণী ও আকরামকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারপিট করে এবং বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিতে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। একপর্যায়ে, তারা ওই তরুণীর অশ্লীল ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইল ও মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। পরবর্তীতে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে কিছু টাকাও দেয় আকরাম ও তার সহযোগীদের। এরপর ভিডিও প্রকাশের ভয়ভীতি  দেখিয়ে আরও মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করে সেখান থেকে চলে যায় ছাইদুল ও তার সহযোগীরা।

পুলিশ জানায়, ওই রাতেই ওই তরুণীকে দুই দফায় ধর্ষণ করে আকরাম ও তার সহযোগী জুয়েল মোল্লা। পরবর্তীতে এ ঘটনার বিষয়টি থানা পুলিশ জানতে পারলে গভীর রাতে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী ও তরুণীসহ ৬ যুবককে আটক করে পুলিশ।

এদিকে চুমুরদী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনারুদ্দিন মোল্লা জানান,  প্রথমে স্থানীয় শালিসের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। তার ছেলের মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও ধারণের বিষয়ে জানতে চাইলে, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow