ভাঙ্গায় বিভাগীয় পর্যায়ে অদম্য নারীর খেতাব পেলেন"বেগম সামর্তবান"- নগদ অর্থ ও ক্রেষ্ট প্রদান

ফরিদপুরের ভাঙ্গার ঘারুয়া ইউনিয়নের হিরালদী গ্রামের বেগম সামর্তবানকে বিভাগীয় পর্যায়ে অদম্য নারী খেতাবে ভূষিত করা হয়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারী রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তাকে এ সম্মানে ভূষিত করা হয়। ঢাকা বিভাগে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ট ৫ জন অদম্য নারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজ কল্যাণ মন্তণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব, এনডিসি মমতাজ আহমেদ, সিনিয়র সচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্তণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক( গ্রেড-১) কেয়া খান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন।ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেনঃ অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন), ঢাকা রাজা মুহম্মদ আব্দুল হাই।এক বর্ণিল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ট পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ৫ জন অদম্য নারীকে সম্মাননা, ক্রেষ্ট, নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। এর মধ্যে একজন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের হিরালদী গ্রামের বেগম সামর্তবান। সমাজ উন্নয়নে ঢাকা বিভাগ-২০২৪ এ শ্রেষ্ট এ অদম্য নারীর রয়েছে বন্ধুর পথচলার অভিজ্ঞতা।তার পিতার নাম হেলাল উদ্দিন মিয়া, ১৯৪৩ সালে গ্রাম:মুন্সি নারায়ণপুর, থানা: মুকসুদপুর, জেলা: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের মুন্সি নারায়ণপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করা সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখা প্রথম সন্তান হিসেবে বেশ আদর যত্নে বড় হয়। পরবর্তীতে একে একে ১২ ভাইবোনের এক বৃহৎ পরিবার হয়। কৃষি নির্ভর পরিবারে বাবা একমাত্র উপার্জনকারী হওয়ায় এক পর্যায়ে দারিদ্রের সাথে সংগ্রাম করতে হয়েছে। অন্যদিকে অতি রক্ষণশীল সমাজ হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের গোরামি ও কুসংস্কারের কারনে স্কুলে গিয়ে পড়ালেখার সুযোগটুকু হয়নি।
পরবর্তীতে বাল্য বয়সে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার হিরালদী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত কৃষক আব্দুল করিম মিয়ার সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। অত্র এলাকায় লোকজন শিক্ষার প্রতি বৈরী ও পশ্চাৎপদ হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের গোরামি, কুসংস্কার, নারীদের মুল্যহীন করে রাখা সহ সীমাহীন প্রতিকুলতা এবং ক্ষেত্রবিশেষ হিংস্রতা দেখাতে ও দ্বিধা করে না। নিজের সাথে প্রতিজ্ঞা করে তার ও স্বামীর জীবনে যতটুকু অপুর্নতা আছে তা সন্তানের মাধ্যমে পুরন করার প্রত্যয় গ্রহণ করবে, সেই সাথে সমাজের প্রান্তিক পর্যায়ে নারী তথা সাধারন মানুষের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
৮ সন্তানের সফল জননী হাড়ভাংগা পরিশ্রম করে সন্তানদের সত্যিকারের মানুষ করার ইস্পাত কঠিন দৃঢ় লক্ষ্য নিয়ে শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে অদম্য নারীর সন্তানেরা আজ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে, দেশে বিদেশে আজ প্রতিষ্ঠিত এমনকি তাদের নাতিপুতিরা ও আজ প্রতিষ্ঠিত। বিশেষ করে বড় ছেলে নজরুল ইসলাম দীর্গদিন ধরে আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত, মেঝো ছেলে মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, স্কুল শিক্ষক, সেঝো ছেলে ওবায়দুর রহমান, বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প কর্পোরেশনে কর্মরত, ছোটো ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম, ব্যাংকার, মেয়েরা ও আজ বেশ প্রতিষ্ঠিত।
অদম্য নারীর দ্বিতীয় স্বপ্ন সমাজের উন্নয়নে কার্যকরভাবে ভুমিকা রাখা বিশেষ করে একজন নারী হিসেবে তা হারে হারে টের পায়, তা-ই নারীদের স্বাবলম্বী করা ও অর্থনীতিতে কার্যকর অবদান রাখার বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
তার প্রাথমিক লক্ষ্য ছিলো সন্তানদের সু সন্তান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। পরিবারের সকল সদস্যরা অত্র ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে অদম্য নারীর নির্দেশনায় সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গায় পৌছানোর জন্য নিরলসভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
What's Your Reaction?






