ভাঙ্গায় রাসেল ভাইপার সাপের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে জনপদে
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় রেলওয়ে জংশন এলাকায় রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ দেখা নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে জনপদে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাঙ্গা রেলজংশনের বামনকান্দা- মালীগ্রাম সংলগ্ন রেললাইনের উপর একটি সাপ দেখতে পান ওই রেললাইনে কর্মরত এক নিরাপত্তা প্রহরী মোঃ সুজন সরকার। এ জাতীয় সাপ তিনি এর আগে কোন সময় এলাকায় দেখেননি বলে জানান। তিনি দ্রুত সাপটির ছবি ক্যামেরাবন্দী করেন। এটি রাসেলভাইপার বলে তিনি দাবী করেন। খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক মানুষ ভীড় করে। আতংকের পাশাপাশি অনেকে ঝোঁপঝাড় কাটতে শুরু করেছেন। নিরাপত্তা প্রহরী জানান,তিনি রেল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এবং এলাকার লোকজনকে বিষয়টি জানিয়েছেন। এলাকার লোকজন জানান,নদী এখান থেকে দূরে থাকলেও রেললাইনে এর উপস্থিতি কৃষকসহ লোকজনের মধ্যে চিন্তার ভাজ ফেলে দিয়েছে। অনেকেই এখন পাটক্ষেত বা সবজি ক্ষেতে যেতে সাহস পাচ্ছেননা। কৃষকরা এখন যথেষ্ট আতংকে রয়েছে। এজন্য কৃষি কাজ ব্যহত হতে পারে। এ জনপদে প্রতিনিয়ত আতংক যেন জেকে বসেছে। রেললাইনে সাপ দেখা দেওয়ায় আতংকের ডালপালা আরও যেন বিস্তৃত হচ্ছে চারদিকে। উপজেলার পদ্মা নদীর তীর ও ভাঙ্গার সীমান্তবর্তী আড়িয়াল খাঁ চরে বসবাস করা জেলেরা মাছ সংগ্রহ করতেও ভয় পাচ্ছেন। সম্প্রতি ভাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী সদরপুরে একের পর এক বিষধর সাপটির দেখা মিলছে নদী তীরবর্তী দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়। এছাড়াও বুধবার সকালে সদরপুর ভাঙ্গা সীমান্তবর্তী জিক্কার মোড়ে এই সাপের দেখা মেলে। ইতিমধ্যে সদরপুরের চরাঞ্চলে এই সাপের কামড়ে ছয় মাসে ঠান্ডু মাতুব্বর, আনোয়ার শেখ, শুভা মাতুব্বর, জাহিদ ফকির, শেখ আব্দুল্লাহর মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। এদের মধ্যে দুই জন শিশু ও তিন জন প্রাপ্তবয়স্ক।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , সদরপুর উপজেলার দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের পদ্মা নদসংলগ্ন নন্দ-লালপুর, হাওলাদার কান্দি, চুঙা কান্দি, হকিয়াতপুর, বিশ্বাস কান্দি, কোটি কান্দি, হালিম মাতুব্বরের কান্দি, জব্বর শিকদার কান্দি ও কুদ্দুস মোল্লার কান্দি চর এলাকার চরে কৃষকেরা ভুট্টা, বাদাম, তিল, আমন ও আউশ ধানের চাষ শুরু করেন। এরই মধ্যে ভুট্টা ঘরে তুলে তিল ও ধানের চাষ করা হয়েছে। সম্প্রতি দুই কৃষক আমন ধান কেটে আঁটি বাঁধা ধান তুলতে গিয়ে রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। তাদের দুই জনই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন। তাদের দুই জনকে যখন সাপে কামড় দেয়, তখন অন্য শ্রমিকরা ধান রেখে চলে যান। এমনকি ভয়ে গরুর ঘাস কাটতেও আসছেন না অনেকে।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তরুন কুমার পাল বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে সাপে কাঁটা রোগীদের অ্যান্টি-ভেনম ইনজেকশন রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সাপে কাঁটা রোগী বা পরিবারের কেউ আতঙ্কিত না হয়ে রোগীকে ওঝার কাছে না নিয়ে সরাসরি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে হবে। সাপে কাটার পর সময় মতো চিকিৎসা দিতে পারলে রোগী বেঁচে যাবে।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক কর্মকর্তা ডাক্তার মাইনুদ্দিন সেতু বলেন রাসেল ভাইপারের কামড়ে আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভেনাম ঔষধ রয়েছে আমরা তাৎক্ষনিক চিকিৎসা দিতে পারব।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম কুদরত এ খুদা বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে কাজ শুরু করেছি। কোথায়ও সাপ দেখা গেলে প্রশাসনকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
What's Your Reaction?