মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগার, দুর্গন্ধে নাকাল এলাকাবাসী

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা বিশাল ময়লার ভাগার চরম দুর্ভোগে ফেলেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে, যার প্রভাব পড়ছে আশপাশের বাড়িঘর, স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে। পথচারীদের নাক চেপে চলতে হয়, আর স্থানীয় বাসিন্দারা পড়েছেন মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।
কালকিনি পৌরসভার নির্দিষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবেই এই দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ২০১৬ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও এখনো কোনো নির্দিষ্ট আবর্জনা ফেলার স্থান নির্ধারণ হয়নি। প্রায় সাত বছর ধরে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর এলাকায় মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলা হচ্ছে, যা ধীরে ধীরে বিশাল ভাগারে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে সেখানে চার থেকে পাঁচ শতাধিক পরিবার বসবাস করে, পাশাপাশি রয়েছে মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল ও হাট।
ময়লার ভাগারের কারণে আশপাশের পরিবেশ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বাতাসে ভেসে আসা দুর্গন্ধের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, “দুর্গন্ধের কারণে ঘরে বসবাস করা যায় না, মসজিদে নামাজ আদায় করা সম্ভব নয়। পথচারীরা পর্যন্ত নাক চেপে চলাচল করেন, অথচ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুধু দুর্গন্ধই নয়, ময়লার স্তুপে মাঝে মাঝেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, ফলে বায়ুদূষণের মাত্রা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছায়। এতে ফুসফুসজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয়রা। শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, বমির মতো সমস্যায় ভুগে অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। দুর্গন্ধের কারণে ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদ হোসেন বলেন, “এটি জনবহুল এলাকা, দ্রুত এই ভাগারটি সরিয়ে নেওয়া হোক। আমরা আর এই সীমাহীন ভোগান্তি সহ্য করতে পারছি না।”
কালকিনি উপজেলার ভারপ্রাপ্ত পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ জানান, “বিকল্প জায়গা নির্ধারণের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই ভাগারটি সরিয়ে নেওয়া হবে, যাতে এলাকাবাসী এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পায়।”
তবে স্থানীয়দের দাবি, বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। দ্রুত এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে জনজীবন আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
What's Your Reaction?






