মিঠাপুকুরে চেয়ারম্যান কে হত্যা প্রচেষ্ঠার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নের জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন ওয়াহেদীর বাড়িতে হামলা ও তাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) রাতে এ হামলা ও হুমকির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ভাংনী ইউপি চেয়ারম্যানের ভাতিজা ফাহিম মুনতাসীর ওয়াহেদী মিঠাপুকুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ এবং ভুক্তভোগী চেয়ারম্যানের পক্ষে চেয়ারম্যান সমিতি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
১ সেপ্টেম্বর রাতে মিঠাপুকুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে উথ্থাপিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নে বন্যার্তদের সাহায্যের নামে আল মা আরিজ যুব সংগঠনের ব্যানারে নগদ প্রায় ২ লাখ টাকা কালেকশন করে কাগজীপাড়া গ্রামের মোতাকাব্বের হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ। কালেকশনের টাকা বন্যার্তদের সহযোগিতায় না পাঠিয়ে টালবাহানার কারণে দ্বন্দ্ব বিবাদ লাগে সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই টাকা বন্যার্তদের সহযোগিতায় সরকারি ফান্ডে পাঠাতে বলেন ইউপি চেয়ারম্যান।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ভাংনী ইউনিয়নের কাগজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জনৈক সাবেক ছাত্রলীগ নেতার ইন্ধনে মোতাকাব্বের হোসেন, রিয়াল মিয়া, নাঈম মিয়া, মোরছালিন মিয়া, এনামুল হক হলুদ, তাজমুল হোসেন, রুকু মিয়া, কোরবান আলী, মানিক মিয়া, হাছিব মিয়া, সজিব মিয়া, লাকাদ মিয়া, সাকিব মিয়া, হামিম মিয়া, গোলাম রব্বানি, সিয়াম মিয়া, মোত্তাকিন মিয়া, রেদোয়ান মিয়া, রোম্মান মিয়া, শহীদ মিয়া, রাতুল মিয়া, শয়ন মিয়া, রাফিন, হাফিজার রহমানসহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জনসহ লাঠি, লোহার রড ও দা নিয়ে চেয়ারম্যানের বসতবাড়িতে অবস্থিত হোমিওপ্যাথিক ফার্মেসিতে হামলা করে। হামলাকারীরা এ সময় দরজা, টেলিভিশন, চেয়ার, টেবিল ভাঙচুর করে প্রায় ৪০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে ও ক্যাশ টেবিলের ড্রয়ার থেকে ৮৬ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্য হত্যা করার হুমকিও দেয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে পুলিশ তদন্তে এলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আলতাবের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় জানায়, রাত ১টায় পুলিশের ২টি গাড়ি এলেও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে এসআই আলতাব উল্টো দুষ্কৃতকারীদের ছাত্র সমন্বয়ক আখ্যা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলায় এলাকায় প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ভাংনী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন ওয়াহেদী জানান, মোতাকাব্বের ছেলেটি নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধীকে পুঁজি করে মাঝে মধ্যেই বিধবা ভাতাসহ সমাজকল্যাণ বিভাগের বিভিন্ন কাজ নিয়ে আমার কাছে তদবির করতে আসে। আমি কোনো তদবিরকারীকে প্রশ্রয় না দেওয়ায় আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিলেন আমার ওপর। সবশেষ শনিবার রেজিস্ট্রেশনবিহীন সংগঠনের নামে বন্যার্তদের সহযোগিতার অজুহাতে কালেকশনকৃত নগদ অর্থ নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়ে জানতে পেরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সরকারি ফান্ডে জমা দিতে বলি। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক স্বৈরাচারের দোসরদের উস্কানিতে আমার অনুপস্থিতিতে বসতবাড়িতে হামলা চালিয়েছে। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
মিঠাপুকুর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান শিমুল জানান, এক বছর হয়নি আমাদের জামায়াত সমর্থিত পায়রাবন্দ ইউপি চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সে হত্যার রহস্য আজও উদঘাটন হয়নি। আবারও আমাদের উপজেলার আরেক ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যার উদ্দেশ্যে বসতবাড়িতে হামলা চালানো হলো। আমরা বড় কোন দুর্ঘটনার আগে এই অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
What's Your Reaction?