মিঠাপুকুরে যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নের বিরাহিমপুর থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার সময় নিজ বাসভবন থেকে মাদকাসক্ত তরুণের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।পুলিশ বলছে এটি হত্যা না আত্মহত্যা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসার পরই বোঝা যাবে।
স্থানীয়রা জানায়,গার্মেন্টস শ্রমিক নয়ন মিয়ার প্রথম সন্তান সালমান (১৮) ছিলো মাদকাসক্ত। মাদকের অর্থের জন্য প্রায়ই নিজের হাত-পা কাটাসহ বাড়িতে মা,দাদীসহ পরিবারের লোকজনকে প্রায়শই মারধর করত। মাদক সেবনের জন্য অর্থ না পেয়েই আতহত্যা করেছে এই তরুণ।
মৃতের দাদী রাসিয়া জানান,সকালে মায়ের কাছে ১০০ টাকা দাবি করে সালমান। খুচরা টাকা না থাকায় তাৎক্ষণিক ১০০ টাকা দিতে পারেনি মা সালমা বেগম। তারপরেই ঘরের দরজা লাগিয়ে দিয়ে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর শুরু করে সালমান।ভাংচুর স্থগিত হওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ ভিতর থেকে কোন শব্দ না আসায় প্রতিবেশী মারুফা বেগম ঘরের বেড়ার ফুটো দিয়ে দেখতে পান সালমান পরনের শাড়ি পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে। মারুফার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে দরজার রশি কেটে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। ফাঁস থেকে নামানোর পরও কিছুক্ষণ জীবিত ছিলো সালমান। ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে মৃত্যুবরণ করে সালমান।
মৃতের মা সালমা বেগম বলেন, আমরা গরিম মানুষ। গত ৩ দিন থেকে আমার ছেলেটা পাগলামো শুরু করছে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো সে সামর্থ্য নাই। আমার কাছে টাকা চাইলো, ওর বাবা ১০০০ টাকা দিয়ে গেছে বাড়ি খরছের জন্য। পুরা টাকাটা দিলেতো ছেলে আমার খরছ করি ফেলবে। এটা ভেবে বললাম, বাবা তোক দিতেছি একটু পর। ছেলে আমার মানলো না। গলায় ফাঁস দিয়ে বাবা আমার মারা গেলো। পুলিশের এতো হাতে পায়ে ধরলাম। এলাকাবাসী বললো আত্মহত্যা করেছে। ছেলেটাক কাঁটাছিড়া করেন নাহ। পুলিশ শুনলো নাহ। বাবা তোরা আমার ছেলেটাক আনি দাও।
মিঠাপুকুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক ও পায়রাবন্দ ইউনিয়ন বিট অফিসার ভবেশ কুমার টাল জানান,এবিষয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি ইউডি মামলা রুজু করা হয়েছে। আগামীকাল লাশ পোস্টমর্টেমের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য সাম্প্রতিক সময়গুলোতে মিঠাপুকুর থানায় মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম বেড়েছে। স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশা ও বয়সের মানুষ মাদকাসক্ত হওয়ায় ধর্ষণ, হত্যা,ছিনতাইসহ অপরাধপ্রবণতা বেড়েছে মিঠাপুকুর থানায়।সর্বশেষ মাদকসেবির হাতে নিহত হন পায়রাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবার রহমান।
What's Your Reaction?