মৈত্রী পানি বর্ষণের মাধ্যমে মাহা সাংগ্রাই উৎসবের সমাপ্তি
পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৩টি ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও এখন থেকে ‘ক্ষুদ্র’ শব্দটি বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং। তিনি বলেন, “আমরা কেউ ক্ষুদ্র বা বৃহৎ নই—আমরা সবাই সমান মর্যাদার জাতি। তাই পাহাড়ে আর ‘ক্ষুদ্র’ শব্দ ব্যবহার করবো না, বরং ‘নৃ-গোষ্ঠী’ শব্দটি প্রয়োগ করবো।”
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বান্দরবানের থানচি উপজেলার বলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ‘মৈত্রী পানি বর্ষণ ও মৈত্তা রি লং পোয়ওয়ে’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ অনুষ্ঠানটি মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ‘মাহা সাংগ্রাই পোয়ওয়ে’ উৎসবের সমাপনী আয়োজন ছিল।
উল্লেখ্য, এর আগেও বান্দরবানের সাংগ্রাই উৎসবে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ‘ক্ষুদ্র’ শব্দের ব্যবহার না করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
কে এস মং বলেন, “থানচির মতো পর্যটনসমৃদ্ধ অঞ্চলগুলোতে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমন অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ১৩টি জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য যে কারো মন কাড়বে। তাই চাঁদাবাজি পরিহার করে স্থানীয় জনগণের জীবনমান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়নে সকলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি শৈ চৌওয়াং। অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বলিপাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উ আযিনা মহাথেরো, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট উবাথোয়াই মারমা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা, কে এস মং-এর সহধর্মিণী নুঙৈচিং মারমা, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা এবং থানচি প্রেস ক্লাবের সভাপতি অনুপম মারমাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
গত ১৩ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী মাহা সাংগ্রাই উৎসবের বিভিন্ন পর্বে ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা আয়োজন ছিল। উৎসবের সমাপনী দিনে মারমা তরুণ-তরুণীরা একে অপরের গায়ে মৈত্রী পানি ছিটিয়ে পুরোনো বছরের গ্লানি ভুলে নতুন বছরের সুখ-সমৃদ্ধির কামনা করেন।
What's Your Reaction?






