রাজেরুং ত্রিপুরাকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে থানচিতে বিক্ষোভ

অনুপম মারমা, থানচি প্রতিনিধি, বান্দরবানঃ
Mar 23, 2025 - 15:29
 0  9
রাজেরুং ত্রিপুরাকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে থানচিতে বিক্ষোভ

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পরিবারের কাছে ফেরার কথা ছিল, কিন্তু ফিরতে হলো লাশ হয়ে-এভাবেই নির্মম পরিণতি হয়েছে রাজেরুং ত্রিপুরার (১৫)। যশোর জেলার কেশবপুর পৌর শহরের খ্রিস্টান আউট রিসোর্ট সেন্টার ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশ মিশন-এর নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাজেরুংকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) মিশনের প্রধান খ্রিষ্টিফা সরকার ও অন্যান্য পরিচালকদের বিরুদ্ধে এ ঘৃণ্য অপরাধের অভিযোগ উঠে। রাজেরুং ত্রিপুরা বান্দরবানের থানচি উপজেলার ১নং রেমাক্রী ইউনিয়নের কালু পাড়ার রমেশ ত্রিপুরার মেয়ে। পরিবারের পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন বড়আজ রবিবার (২৩ মার্চ) সকাল ১০টায় থানচি উপজেলার তিন রাস্তার মোড়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পাহাড়ি শিক্ষার্থী ও সচেতন সমাজের সদস্যরা জড়ো হন। ‘থানচি ত্রিপুরা সচেতন সমাজ’ ব্যানারে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং সেখানেই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করেন

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমাদের আদিবাসী নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। একের পর এক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটছে, কিন্তু অপরাধীরা আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বোন রাজেরুং ত্রিপুরা বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে চেয়েছিল, কিন্তু তাকে ফিরতে হলো লাশ হয়ে।” 

কেশবপুরের এই মিশন সম্পর্কে তারা আরও বলেন, এটি কোনো খ্রিস্টান মিশন নয়, বরং কিছু ব্যক্তির অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান। গরিব ও অসহায় মেয়েদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে এখানে নিয়ে আসা হয়। ২০০৯ সালেও এ প্রতিষ্ঠানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল, কিন্তু অপরাধীরা ধরা পড়েনি। এবার আমরা আর চুপ করে থাকব না।”

সমাবেশের বক্তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তারা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কিন্তু আমাদের মা-বোনদের নিরাপত্তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটছে, কিন্তু বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।”

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের সভাপতি ও ৩৭০ নং মদুকছড়া মৌজা হেডম্যান সিমন ত্রিপুরা, অন্দ্রিজয় ত্রিপুরা, এনি ত্রিপুরা, ক্যহাইসিং মারমা, শিক্ষক লিটন ত্রিপুরা ও মুক্ত ত্রিপুরাসহ আরও অনেকে

এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে সচেতন মহল দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেএ বিষয়ে প্রশাসন কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা জানতে অপেক্ষায় থাকবে পুরো পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোআমরা চাই, রাজেরুং ত্রিপুরার হত্যার বিচার হোক এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow