লামায় বিভিন্ন খালছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কোনভাবেই থামছে না

লামা(বান্দরবান) প্রতিনিধি
Jan 28, 2025 - 22:43
 0  15
লামায় বিভিন্ন খালছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কোনভাবেই থামছে না

বান্দরবানের লামায় বিভিন্ন খালছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। ফলে ঝিরি, খালছড়ার তীরবর্তী ফসলি জমি, রাস্তা, ব্রিজ কালভার্ট ভাঙনের কবলে পড়েছে। প্রশাসন লাগাতার অভিযান করেও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কোনোভাবেই থামাতে পারছেন না। বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে বালু মজুদ ও বিক্রির পয়েন্ট। আর বালু বহনকারী ট্রলি ও ট্রাক্টরগুলো বেপরোয়াভাবে যাতায়াত করায় গ্রামীণ সড়কগুলোও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।

 উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলার ফলে সরকারি ব্রিজ কালভার্ট চরম হুমকির মুখে আছে। 

ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি খাল ও শাখা প্রশাখা খাল-ছড়া থেকে চিহ্নিত সিন্ডিকেট সদস্যরা ১৫ টির ও বেশি পয়েন্টে দীর্ঘকাল থেকে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন করছে। এর ফলে সেখানে সড়কে একটি গার্ডার ব্রিজের বেইজের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে ধ্বসে পড়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। আরেকটি ছোট ব্রিজ ইতিমধ্যে ধ্বসে পড়েছে। স্থানীয় ভুক্তভোগীরা বলেন, বালু উত্তোলনের ব্যাপারে কথা বললেই মিথ্যা মামলাসহ জীবননাশের হুমকি আসে। কিছুদিন আগে বালু উত্তোলনের রিপোর্ট প্রকাশ করায় স্থানীয় এক সাংবাদিককে বালু সিন্ডিকেট সরাসরি মুঠোফোনে গালমন্দ, হামলার হুমকিও দিয়েছিলো। পরে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। লামা উপজেলার বিভিন্ন বালু পয়েন্ট অবৈধভাবে দখল নিয়েছে, পার্শবর্তী চকোরিয়া ডুলহাজারাবাসীর কিছু প্রভাবশালী লোক। তাদের কাছে দেশীয় অস্ত্রসহ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সন্ত্রাস বাহিনী। যে কারণে সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পায় না কেউ। লামা উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, পার্বত্য এই উপজেলায় নির্দিষ্ট কোনো বালু মহল নেই। সরকারিভাবেও ইজারা প্রদান করা হয়নি কোনো বালুর পয়েন্ট। সুতরাং বিভিন্ন স্থানে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। অভিযোগ ওঠেছে পাশবর্তী চকরিয়া উপজেলার প্রভাবশালী গ্রুপটি সরকারি নিয়মনীতি না মেনে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কুমারী পেতাইন্যাছড়া রাস্তার পাশে ছড়া ও ঝিরিসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রকাশ্যে ১২টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এর ফলে সেখানকার চলাচল রাস্তা, লামা উপজেলা সীমান্ত লাগুয়া কক্সবাজার বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের সংরক্ষিত বাগানের পাহাড় ধ্বসে পড়ছে।  শুকিয়ে যাচ্ছে ঝিরি-ছড়ার পানি। কক্সবাজার বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ অফিসার জানান, কয়েকদফা অভিযান করে ড্রেজার মেশিন ও পাইপ কেটে দেয়া হয়েছে, বালুসহ গাড়িও জব্দ করা হয়। তাছাড়া বালু উত্তোলন হচ্ছে পার্বত্য লামার অংশে। যৌথ অভিযান করলে কিছুটা সুফল আসতে পারে বলে এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, কুমারি পেতাইন্যাছড়া অংশে বালু উত্তোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের তাহের মেম্বার, সরোয়ার, গিয়াস উদ্দিন, মিরাজ গং। তারা প্রতিটি গাড়ি থেকে দু'শ্ টাকা করে নেয় বলে জানাযায়। এ বিষয় জানতে চাইলে, তাহের মেম্বার মুঠোফোনে জানান, এসব কাজে সে জড়িত নেই, তার নাম ভাঙিয়ে কে বা কারা এটা করছে। এই মেম্বার আরো বলেন, 'সরোয়ার নামের একজন বালু উত্তোলন বিক্রয় কাজ সমন্বয় করছেন বলে শুনেছি। পরিবেশ অধিদপ্তরসহ লামা প্রশাসনের দ্রুত কার্যকরী হস্তক্ষেপ কামণা করেছেন স্থানীয়রা।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow