সদরপুরে হায়োসিন বা শয়তানের নিঃশ্বাস দিয়ে ভয়ংকর প্রতারণা
হায়োসিন বা শয়তানের নিঃস্বাস নামে পরিচিত ভয়ংকর এই মাদক দিয়ে প্রতরণা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সারাদেশের ন্যায় স্কোপোলামিন বা শয়তানের নিঃস্বাস দিয়ে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা সদরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিভিন্ন অজুহাতে বিভিন্ন ভাবে সরল মানুষদের টার্গেট করে একেরপর এক প্রতারণা করে চলেছে একটি প্রতারক চক্র। কেউ একজন এসে হাতে একটা ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দিয়ে বললো আমি পড়তে জানিনা। ঠিকানাটা একটু বলে দিবেন। কার্ড হাতে নিলেই মুহুর্তের মধ্যে তার মস্তিস্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় প্রতারক৷ এরপর প্রতারকের কথা মত ভুক্ত ভোগীর কাছে যা চায় তাই দিয়ে দিতে বাধ্য হয়। প্রতারকরা কখনো ভিজিটিং কার্ড, কখনো লবনের প্যাকেট আবার কখনো বিয়ের বাজারের তালিকা ধরিয়ে দেয়। অবচেতন অবস্থায় ভুক্তভুগীর তেমন কোন কিছু মনে না থাকার কারনে কেউ কোন অভিযোগ করতে চায়না৷ সদরপুর উপজেলার কলেজ মোড়ে অটো স্টান্ডে প্রতারনার শিকার এক নারী শাহিনুর আক্তার(৪৮) জানান, আমি অটোতে উঠার পর আর কোন যাত্রী ছিলনা। চালক বলে আমার একটু ব্যাস্ততা আছে আমি আপনাকে একা নিয়েই চলে যাব। কিছুদুর যাওয়ার পর সদরপুর পিয়াজখালী সড়কের পাশে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে গেলে চালক আমার হাতে একটি স্বর্নের গহনা তৈরীর তালিকা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বলে ছোটবোনের বিয়ের গহনা লাগবে, কি কি লেখা আছে একটু বলবেন। শাহিনুর জানান এরপর আর কিছু মনে নেই। অটো চালকের কথা মত আমার গলার স্বর্নের চেইন, ব্যাগে থাকা নগদ টাকা,ও মোবাইলফোন দিয়ে দেই। এরপর সব নিয়ে সে চলে যাওয়ার পর আমি বুঝতে পারি আমি প্রতারকের খপ্পরে পরেছি। আরেক ভুক্তভুগী নারী,শম্পা আক্তার(৩৫) জানান সদরপুর বাজারে কিছু তরকারী ও মাছ কিনে এক মুদি দোকানের সামনে দাড়িয়ে হাতের বাজারের ব্যাগ ঠিক করছিলাম, এমন সময় মধ্যবয়স্ক এক পুরুষ এসে আমাকে বলে আপা আমার লবনের প্যাকেটটা একটু ধরেন। আমি একটা সদাই (পণ্য) রেখে আসছি ওই দোকানে। সরল বিশ্বাসে তার লবনের প্যাকেট হাতে নেওয়ার পর আর কিছু মনে নেই। সে আমাকে ইশারা দিয়ে বাজারের বাইরে সদরপুর গার্লস স্কুলের কাছে নিয়ে যায়। তার কথা মত আমি আমার কাছে থাকা সোনার আংটি, গলার চেইন, দামী মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা দিয়ে দেই। প্রতারক চলে যাওয়ার পর বুঝি আমি প্রতারনার শিকার হয়েছি। বিগত ছয়মাসে এরকম বেশ কয়েকটি প্রতারনার ঘটেছে সদরপুর বাজার, কলেজ মোড়, উপজেলার পুকুর পাড় সহ আশ পাশে। শয়তানের নিঃস্বাসে ভুক্তভুগী কিছু সময়ের জন্য অবচেতন(হ্যালোসিন) হয়ে যায় বলে সুস্থ্য হওয়ার পর সে তেমন কিছু মনে করতে পারেনা। ফলে এই ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ করতে চায়না। এসব প্রতারকের খপ্পরের বেশি শিকার হয় নারীরা। দিন দিন বেড়েই চলেছে ভয়ংকর মাদক শয়তানের নিঃস্বাসের দ্বারা প্রতারণা। এই ভয়ংকর প্রতারনা থেকে কিভাবে নিস্থার পাওয়া যাবে, সেটা প্রশাসন কার্যকরী পদক্ষেপ নেবেন এমুনটা মনে করছেন সদরপুর উপজেলার সাধারণ মানুষেরা।
What's Your Reaction?