সালথায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি থামছেই না

জাকির হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার
Jun 28, 2024 - 18:35
 0  69
সালথায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি থামছেই না

ফরিদপুর জেলার মধ্যে পাট ও পেঁয়াজ উৎপাদনে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে সালথা উপজেলা। এখানকার মাটি খুবই উর্বর। এখানে বছরজুড়ে নানা ধরনের ফসল উৎপাদন করে এ অঞ্চলের কৃষকেরা। আর সেই কৃষিজমি হতে দিনে ও রাতের আঁধারে অবৈধ উপায়ে মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি সিন্ডিকেট। এতে এ এলাকার কৃষি খাত হুমকির মুখে পড়েছে। যার প্রভাব পড়ছে উৎপাদন খাতে। 

শুধু তাই নয় মাঝে মাঝে কৃষি জমির নিকটবর্তী হতে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালুও উত্তোলন করা হচ্ছে। যার ফলস্বরুপ পাশের কৃষিজমি ভেঙ্গে পুকুরের মধ্যে চলে গিয়ে জমি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি জায়গায় কৃষিজমি কেটে মাটি বিক্রি ও ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। খবর পেয়ে মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে কয়েকজনকে আটক করে দণ্ড দেন। এর পরও বন্ধ হয়নি মাটি বিক্রি ও ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কার্যক্রম।

শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের জয়কালী গ্রামের জয়কালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোল ঘেষে নিত্য গোপাল রায় নামক এক ব্যক্তির জায়গা হতে অপরিকল্পিত ভাবে মাটি কেটে অবৈধ ট্রলি গাড়ীতে করে বিক্রয় করছেন হুমায়ুন নামক এক মাটি ব্যবসায়ি। ফলে ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে বিদ্যালয়ের ভবন। মাটি ব্যবসায়ি হুমায়ুন দীর্ঘদিন ধরে জয়কালী এলাকায় অবৈধ উপায়ে মাটি কেটে বিক্রয় করে আসছে বলে জানা যায়। 

একই ইউনিয়নের কিত্তা গ্রামের আখের আলী নামক এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে নকুলহাটি, মিরকান্দি, কিত্তা, বোয়ালিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা হতে মাটি বিক্রি করে আসছেন। রাত হলেই নকুলহাটি এলাকায় শুরু হয় আখের আলীর ট্রলি ও ডাম্প ট্রাকের  তাণ্ডব। ফলে একদিকে যেমন সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কাচা পাকা সড়কগুলো নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনে কষ্ট হচ্ছে।

এছাড়াও মাঝে মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় রাতে ও দিনে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট অবৈধ ভাবে কৃষি জমি হতে ভেকু মেশিন দিয়ে কৃষিজমির মাটি কেটে ট্রাক ও ট্রলি বোঝাই করে বিক্রি করে আসছে। এসব মাটি বিক্রির নেপথ্যে কারা এবং মূল হোতাকে এখনও শনাক্ত করতে পারেনি প্রশাসন। অভিযান হলে আটক হয় মাটি বহনকারী বা এক্সক্যাভেটর চালক। কিন্তু মূল ব্যবসায়ীরা রয়ে যায় পর্দার আড়ালে। কেন স্থায়ীভাবে মাটি কাটা বন্ধ হয় না, মাটি ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের চেয়েও শক্তিশালী কিনা– এসব প্রশ্ন স্থানীয়দের। দায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবি এলাকাবাসীর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সচেতন লোক বলেন, বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। আর জেলার মধ্যে সালথা উপজেলার কৃষি জমি অন্যতম। এই উর্বর জমি হতে মাটি কাটার এমন কার্যক্রম চলমান থাকলে ভবিষ্যতে এখানকার কৃষি জমির সংকট দেখা দিতে পারে। কৃষি বাঁচাতে এসব মাটির কারবার বন্ধ করতে প্রশাসনের নজরদারি একান্তভাবে কাম্য।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আনিচুর রহমান বালি বলেন, তথ্য পেলে মাটি কাটা বন্ধ করে দেই, আমি ছুটিতে আছি। আমি থানায় জানাচ্ছি।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow