সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারীতে ১০ গ্রামে ঈদ উদযাপন

আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
Mar 30, 2025 - 14:18
 0  13
সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারীতে ১০ গ্রামে ঈদ উদযাপন

সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারী উপজেলার ১০টি গ্রামে পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উদযাপন হয়েছে।

রোববার (৩০ মার্চ) ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সহস্রাইল দায়রা শরিফ, রাখালতলি ও মাইটকুমরা মসজিদে তিনটি জামায়াতে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হয়ে সাড়ে ১০টার মধ্যে পর্যায়ক্রমে জামায়াত শেষ হয়। ঈদের নামাজ শেষে মুসল্লিরা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

শনিবার (২৯ মার্চ) রাতে সৌদি আরবে ঈদুল ফিতর উদযাপনের ঘোষণা আসার পর ফরিদপুরের এসব গ্রামের মুসল্লিরা ঈদের জামায়াতের সময়সূচি নির্ধারণ করেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ও রুপাপাত ইউনিয়নের ছয়টি গ্রাম এবং আলফাডাঙ্গা উপজেলার ধলারইচর গ্রামের কিছু ধর্মপ্রাণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোজা পালন ও ঈদ উদযাপন করে আসছেন। এরা সবাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা মির্জাখিল পীরের তরিকাপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার হযরত ইয়াছিন আলী (রহ.) পীরের অনুসারী।

সহস্রাইল দায়রা শরিফে ঈদের জামাতে ইমামতি করেন আলফাডাঙ্গা উপজেলার ধলারইচর দরবার শরিফের পীর সাহেব ও ফরিদপুর কামিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক মুহাদ্দিস মুফতি রাকীবুল হাসান রাকীব। নামাজে অংশ নেওয়া আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও বোয়ালমারীর কাঁটাগড় গ্রামের বাসিন্দা মো. মাহিদুল হক বলেন, "আমাদের পূর্বপুরুষরা ভারতের কলকাতা মির্জাখিল পীরের অনুসারী ছিলেন। তাই আমরা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালন করি। বোয়ালমারী উপজেলার কাটাগড়, সহস্রাইল, দরিসহস্রাইল, মাইটকুমরা, রাখালতলি, গঙ্গানন্দপুরসহ আলফাডাঙ্গার ধলারইচর গ্রামের কয়েকটি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এভাবে ঈদ উদযাপন করে আসছে।"

নামাজে অংশগ্রহণকারীদের জন্য সহস্রাইল দায়রা শরিফ মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। এতে উপস্থিত মুসল্লিরা তৃপ্তির সঙ্গে খাবার গ্রহণ করেন।

ধলারইচর গ্রামের বাসিন্দা আবু বক্কার সিদ্দিক জানান, "সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে আগে আমরা ধলারইচর মাদ্রাসা ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামায়াত করতাম। তবে আমাদের ইমাম অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান মারা যাওয়ার পর সেখানে আর জামায়াত হয় না। তাই আমরা এখন বোয়ালমারীর সহস্রাইল দায়রা শরিফে এসে নামাজ আদায় করি।"

ফরিদপুরের এই এলাকাগুলোতে একদিন আগে ঈদ উদযাপনের এই ঐতিহ্য যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে। মুসল্লিরা মনে করেন, এটি তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা ভবিষ্যতেও ধরে রাখা হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow