হাসের সাথে খেলতে খেলতে উধাও, ১ দিন পর ভাসমান অবস্থায় শিশুর লাশ উদ্ধার
ফরিদপুরে নগরকান্দায় হাঁসের সাথে খেলতে গিয়ে নিখোঁজের ১ দিন পর বাড়ির পাশের পুকুর থেকে আব্দুল্লাহ নামে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরকান্দার বড় পাইককান্দী গ্রামের একটি পুকুর থেকে শিশুটির মরাদেহটি ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শিশু আব্দুল্লাহ্ নিখোঁজ হয়। নিহত শিশু উপজেলার বড় পাইককান্দী গ্রামের বনগ্রাম বাজারের নৈশ্য প্রহরী টিটুল শেখের ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সরোয়ার খান জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ির উঠানে শিশুটির মা শিশুটিকে হাসের সাথে খেলতে দেখে তিনি পাশে বাড়িতে যান, ফিরে এসে শিশুটিকে দেখতে না পেয়ে শিশুটির বাবা টিটুল শেখ কে খবর দিলে চতুদিকে খোজাখুজি করতে থাকেন।
গ্রামবাসী ও শিশুটির বাবা মা অনেক খোজাখুজি করেও না পেয়ে এক পর্যায়ে তারা সন্দেহ করে শিশু আবদুল্লাহ বাড়ির পাশে পুকুরে পরলো কিনা। তখন দ্রুত ফায়ার সার্ভিস নগরকান্দাকে খবর দিলে রাত ৮টার দিকে নগরকান্দা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে বাড়ির পাশে একটি পুকুরে অনেকক্ষন খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটিকে পায়নি।
পরেরদিন বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্রামের একাধিক পুকুরে তল্লাশি চালায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। তারাও আব্দুল্লাহর অবস্থান সনাক্ত করতে পারেনি। কিন্তু ডুবুরি দল চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় প্রতিবেশী নাহিদা বেগম পুকুর পারে গাছ লাগাতে গেলে ভাসমান অবস্থায় শিশুটির লাশ দেখতে পান । তিনি বলেন, আমি প্রথমে পুতুলের মতো কিছু একটা ভাসতে দেখি। কাছে গিয়ে দেখি আব্দুল্লাহর লাশ। পরে আমার চিৎকারে আসে পাশের লোকজন এসে শিশুটিকে উদ্ধার করেন।
প্রতিবেশী নাহিদা বেগম আরো জানান, টিটুল শেখের স্ত্রী রেবেকা বেগম প্রথম মেয়ে হবার পর একটি মৃত ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়। পরে ছেলে সন্তানের আশায় দ্বিতীয়বারেও একটি মেয়ে হয় তারপর প্রায় পাঁচ বছর পর আব্দুল্লার জন্ম হয়। এতো বছর পর তাদের পুত্র সন্তান হওয়াই তারা সংসার জীবনে খুব সুখী ছিল। ছেলেটার এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এখন পাগল প্রায় বাবা মা। এভাবে দুটি ছেলেকে হারিয়ে গাপলের মতো হয়ে গেছেন টিটুল ও তার স্ত্রী রেবেকা। তাদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে বাড়ির পরিবেশ।
এঘটনার পর নগরকান্দা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার রাত ৮ টা থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত আমাদের ডুবুরি দল শিশুটির খোজে বাড়ির আশপাশের অন্তত ৪টি পুকুরে তল্লাশি চালিয়েছে। পুকুরে জাল ফেলেও খোঁজা হয়েছে। তাও শিশুটিকে পাওয়া যায়নি। আমরা চলে আসার পর বাড়ি থেকে অনেক দূরে একটি পুকুরে তার লাশ পাওয়া গেছে। ধারনা করা হচ্ছে, শিশুটি খেলতে খেলতে পানিতে ডুবে মারা গেছে।
এদিকে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফর আলী জানান, গতকাল সন্ধায় শিশুটি হারিয়ে যাবার খবর পাই, সেখানে ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল গিয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত কয়েকটি পুকুরে তল্লাশি চালায় পরে আজ সকাল থেকে তারা তাদের কার্যক্রম চালায় কিন্তু অনেক খোজার পর না পেয়ে তারা তাদের উদ্ধার কাজ সমাপ্তী ঘোষণা করেন। বিকাল আনুমানিক ৫ টার দিকে শিশুটির এলাকা থেকে ফোন করে আমাকে জানায় শিশুটিকে অন্য একটি পুকুরে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠাই প্রাথমিক সুরেতহালে তার কোন আঘাতের চিহৃ পাই নাই। আমরা ধারণা করছি শিশুটি পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
What's Your Reaction?