৪ বছরেও হয়নি সংযোগ সড়ক, চরম দুর্ভোগে কয়েক হাজার মানুষ

আলমাছ বেপারী, কালকিনি প্রতিনিধি, মাদারীপুরঃ
Mar 9, 2025 - 17:05
 0  18
৪ বছরেও হয়নি সংযোগ সড়ক, চরম দুর্ভোগে কয়েক হাজার মানুষ

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় প্রায় ৫ কোটি টাকার সেতুর নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকার কারণে দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার। সেতুর দুই পাশেই সংযোগ সড়ক না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটে প্রায়ই, ছাত্র-ছাত্রীরা নিরাপদে বিদ্যালয়ে যেতে পারছেন না, হাট-বাজারে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এবং শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই আতঙ্কে থাকে কখন দুর্ঘটনা ঘটবে। বার বার কালকিনি এলজিইডি অফিসে যোগাযোগ করা হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

কালকিনি উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের কালকিনির শিকারমঙ্গল ও চরদৌলত খান ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা মিয়ার হাট নামক স্থানে আড়িয়াল নদের শাখা খালে প্রায় ৫ কোটি টাকার প্রকল্পে নির্মিত হয়েছে ৫১ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মিয়ারহাট বাজারের পাশে খালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে নির্দিষ্ট সময়ে ব্রীজটির তিনটি স্প্যানসহ মূল অবকাঠামো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরদার এন্টারপ্রাইজ। তবে, সংযোগ সড়ক নির্মাণ ছাড়াই সেতুটি ফেলে রাখা হয়েছে। সেতুর মাটি থেকে উচ্চতা প্রায় ১২ ফুট হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য এটি বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এলজিইডির পক্ষ থেকে ব্রীজটির এক পাশে কিছু বালু ফেলা হলেও অন্য পাশে কিছুই করা হয়নি, ফলে স্থানীয় জনগণকে দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতুটির পশ্চিম পাশে মিয়ার হাট বাজার থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারছে না, যার কারণে অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী কাসেম মিয়া বলেন, "ব্রীজটি নির্মিত হওয়ায় আমরা খুশি, কিন্তু আজ সাড়ে ৩ থেকে ৪ বছর ধরে এটি সংযোগ সড়ক ছাড়া পড়ে আছে। মিয়ার হাট বাজারে সপ্তাহে দু'বার হাট বসে, কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় মানুষ আগের মতো আসছে না, ফলে ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে সাহায্য চেয়েছি, কিন্তু কোনো সমাধান পাইনি।"

পথচারী জব্বার আঁকন বলেন, "ব্রীজটির দুই পাশের রাস্তা না থাকার কারণে এটি এখন আমাদের জন্য এক ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে মালামাল আনা-নেওয়া করা যায় না, অন্যদিকে ব্রীজ থেকে নামতে গিয়ে কয়েকদিন আগে এক বৃদ্ধ দুর্ঘটনায় পড়েছেন। তাই আমরা দাবি জানাচ্ছি, যত দ্রুত সম্ভব সরকার যেন এর সমাধান দেয়।"

কালকিনি উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান এবং উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দোহাই দেন। তবে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়ে বলেন, "এলজিইডির সঙ্গে কথা হয়েছে, খুব শীঘ্রই এর সমাধান করা হবে যাতে ওই অঞ্চলের মানুষ এই চরম দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে পারে।"

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow